Sunday, November 8, 2015
মধ্যবর্তী এবং ধনীর মধ্যে ১০ চির সত্য পার্থক্য !! জানার কি শেষ আছে?! (মনে হয় মেগা টিউন#)
আমার আজকের টিউন একটি টেকনোলজির বিপরীত পাশের। যদিও প্রযুক্তির ছোঁয়া খুব কম থাকবে টিউনে তবে আমরা এই চির সত্য আইডিয়া না জেনে কীভাবে নিজের মনের গহীনের সত্যকে উন্মোচন করবো। আসলে তাই আমরা মাঝে মাঝে খুব বোর ফিল করি নিজের লাইফ নিয়ে। আর সেই জন্যই এই বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে বেড়ে গেছে মানুষের দৈনন্দিন ধ্যান ধারণা। আর সেই সাথে আমরা নিজেকে মানিয়ে নিতে খুব কষ্ট করতে হয় এই বাস্তব সমাজে।
এই পৃথিবীর ১% মানুষ যে সম্পদের মালিক বাকিরা মোট সেই সম্পদের মালিক নই। কি আচ্চার্য হলেন? হলেও কিছু করার নাই। এটা চির সত্য কথা। যেকারনে পৃথিবীর কমপ্লেক্সসিটি এতো বেশি।
বেশির ভাগ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে, আর এই ধনী এবং গরীবের মাঝে এক দল হতভাগা আছেন, যারা পারেনা নিত্য নতুন গাড়ি বদলাতে বা গাছ তলায় শুয়ে দিন কাটাতে। পারে না নিজের সম্মান ধরে রাখতে, আবার বেইজ্জতি হতে!!
এই কমপ্লেক্সসিটির মধ্যে তারা খুব আত্ম-সম্মানবোধে ভোগেন। আজ আমি চেষ্টা করবো এই ধনী এবং মধ্যবর্তীর মাঝের কিছু চির সত্য কথা নিয়ে। দেখি কারা জিতে। আসুন তাহলে শুরু করি।
মধ্যবর্তী এবং ধনীর মধ্যে ১০ চির সত্য পার্থক্য:
১) মধ্যবর্তীরা আরাম পাই কিন্তু ধনীরা আরাম খোঁজেঃ
অনেকটা আচ্চার্য হলেন নাকি? হ্যাঁ এটা গবেষণা থেকে পাওয়া। মধ্যবর্তীরা ছোট চাকরি করে বা নিজের ছোট ব্যবসা থাকে কিন্তু দিন শেষে পরবর্তী দিনের হাজারো চিন্তা থাকলেও তারা নিজের এই অলস সময়ে সুখি থাকে বৈকি।
কিন্তু ধনীরা সম্পদ এবং নিজের নামের কাছে সুখ খোঁজে, যেটার জন্য প্রতিনিয়ত রিস্ক নিতে হয়, যার ফলে জীবন উপভোগ কি বা আরাম কি এটার মধ্যে দিয়ে তাদের যাওয়া কঠিন হয়ে যায়, তবে খুঁজে ফেরে প্রতিনিয়ত।
২) মধ্যবর্তীরা তাদের প্রয়োজনকে প্রাধান্য দেই কিন্তু ধনীরা সেটা একটু এড়িয়ে চলেঃ
একজন ধনী ব্যক্তি ইচ্ছা করলে অনেক দামি নতুন গাড়ি বছরে বছরে কিনতে পারে বা নিজের বিলাসিতার জন্য ব্যবহার করতে পারে, কিন্তু তারা সেটা খুব রয়ে-সয়ে করে। পরিবর্তে তারা নিজের সম্পদের পরিমান বাড়াতে সব সময় সচেষ্ট থাকে।
কিন্তু মধ্যবর্তীরা তাদের সামর্থ্যের মধ্যে যা প্রয়োজন তাই নিজেদের কাছে রাখার চেষ্টা করে।
৩) মধ্যবর্তীরা গাছে চড়ে, আর ধনীরা গাছ লাগায়ঃ
মধ্যবর্তীরা হয়তো চাকরি করে বা ছোট বিজনেসের মালিক হয়। তারা তাদের সারা সময়টা এর পিছনে ব্যয় করে। কিন্তু ধনীরা নেটওয়ার্ক বাড়ায়। তারা নিত্য-নতুন বিজনেসের সাথে যুক্ত হওয়ার পরিকল্পনায় থাকে। ধনীরা প্যাসিভ ইনকামে বিশ্বাসী।
৪) মধ্যবর্তীর বন্ধু অনেকে, কিন্তু ধনীরা এক্ষেত্রে হিসাবীঃ
বিশেষজ্ঞরা বলে আপনার খুব কাছের ৩ বন্ধুর গড় ইনকাম করার সামর্থ্য আপনার আছে। অর্থাৎ আপনি যাদের পাশে পাশে থাকবেন তাদের দ্বারা আপনি প্রভাবিত হবে। এখত্রে ধনী ব্যক্তিরা খুব সফল ব্যক্তিদের মাঝেই সময় দিয়ে থাকেন। কিন্তু মধ্যবর্তীরা একটু আমোদ প্রিয়। তাদের সার্কেলে সবাই থাকে।
৫) মধ্যবর্তীরা ইনকামের জন্য কাজ করে কিন্তু ধনীরা শেখার জন্য কাজ করেঃ
একটা প্রবাদ আছে, “When you are young, work to learn, not to earn.”
অর্থাৎ আপনার যখন সময় আছে তখন ইনকামের চেয়ে নিজের শেখার পাল্লাকে ভারী করুন সেটা এক সময় আপনার নিজের চাওয়াকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
মধ্যবর্তীকে একটু ভালো স্যালারির চাকরি দিলে সে পূর্বের চাকরি ছেড়ে দিবে নির্দ্বিধায়, কিন্তু ধনীরা সেটা করেনা। তারা জীবনের প্রথম অবস্থায় কষ্ট করে শিখে নিতে চাই, পৃথিবীর কাছে তার প্রাপ্য খুঁজে নিতে।
৬) মিডল ক্লাস জিনিসে বিশ্বাসী অন্যদিকে ধনীরা টাকায়ঃ
মধ্যবর্তীরা টাকা একটু বেশি আসলে সেটা নতুন কিছু জিনিস কিনে রাখে। বাড়ি সাজায়, গাড়ি কিনে। কিন্তু ধনীরা সেটার বিপরীত তারা টাকা দিয়ে টাকা বানানোয় বিশ্বাসী। তারা নিজেদের প্রয়োজন মেটাবে তবে এক্সসেস না। যেটা দরকার সেটার পরে তারা মানি জেনারেটে ব্যস্ত থাকবে।
যেমন ১৯৫৮ সালে ওয়ারেন বাফেট ৩১ হাজার ডলারের সেই বাড়ি এখনও বদলান্নি। তিনি পারেন কিন্তু অনাবশ্যক ভেবে অন্য দিকে টাকা কাজে লাগাচ্ছেন।
৭) মধ্যবর্তীরা জমাতে পছন্দ করে কিন্তু ধনীরা আর্নিং এঃ
প্রয়োজনের বেশি টাকা থাকলে মধ্যবর্তীরা সেটা জমাতে পছন্দ করেন ভবিষ্যতের জন্য, কিন্তু ধনীরা জমানোর চেয়ে সেটা আর্নিং মেথড খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন।
৮) মধ্যবর্তীরা টাকাকে আবেগের সহিত দেখে কিন্তু ধনীরা লজিকেঃ
মধ্যবর্তীরা টাকা ইনকাম এবং খরচ সব জায়গায় আবেগ রাখে, এমনকি ইনভেস্টেও। কিন্তু ধনীরা সেটাকে লজিকের সাথে তৈরি করে।
কারণ আবেগ সব সময় ভালো কাজের সহায়ক নয়।
৯) মধ্যবর্তীরা তাদের সম্ভাবনাকে দমিয়ে রাখে কিন্তু ধনীরা সেটা বাড়ানোর চেষ্টা করেঃ
মধ্যবর্তীরা চেষ্টা করে কীভাবে ইনকাম করবে কিন্তু তারা তাদের সম্ভাবনাকে ভুলে যায়। কেউ হয়তো বলে টাকার কাছে মানুষ বন্ধী। কিন্তু ধনীরা সম্ভাবনাকে ছেড়ে না দিয়ে তার পিছু তারা দৌড়াতে থাকে এবং সেটাকে বাস্তবে রূপান্তরিত করে।
১০) মধ্যবর্তীরা কঠোর পরিশ্রমে বিশ্বাস করে কিন্তু ধনীরা স্মার্টলিঃ
কঠোর পরিশ্রম আপনার উন্নতির জন্য অতীব প্রয়োজনীয় কিন্তু শুধু কঠোর পরিশ্রম আপনাকে উন্নত করবে না। আপনাকে কঠোর পরিশ্রমের সাথে নিজেকে নিয়ে ভাবতে হবে, নিজের ভুল সংশোধন করতে হবে, নতুন নতুন আইডিয়া জেনারেট করতে হবে। না হলে আপনি শুধু কঠোর পরিশ্রম করে যাবেন কিন্তু সেটা খুব বেশি ফল দিবে না।
মধ্যবর্তীরা নিরাপদ লক্ষ্য নির্ধারণ করে, যেটা তাদের সার্ধে কুলাবে। যেটার জন্য তারা লড়ে যাবে। কিন্তু ধনীরা লক্ষ্য নির্ধারণ করবে সুদূর প্রসারি এবং যা পাওয়া বেশ কঠিন। তারা তাদের আইডিয়া সেই দিকে রেখেই এগিয়ে যাবে এবং এক সময় সাকসেস নিয়ে বের হবে। ঝড় বাঁধা আসবে কিন্তু সেটা তাদেরকে দমাতে পারবে না!!
দেশে-কাল অনুসারে ধনী এবং মধ্যবর্তীর মধ্যে আছে ব্যাপক পার্থক্য। আমাদের দেশের খুব ধনী অন্য দেশে মধ্যবর্তী হওয়ারও অনেক সময় যোগ্য না হতে পারে।
অনেক সুন্দর করে লিখেছেন।
ReplyDeleteআপনাকে ধন্যবাদ
Delete